ফরিদপুরের ইতিহাস খ্যাত সেই কাকদীর বাওড় এখন মৃত্যু ফাঁদ ।
ভয়ঙ্কর আর্সেনিক চিন্হিত ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলায় অবস্থিত একমাত্র বাওড়; কাগদীর বাওড় এখন মৃত্যুকূপে পরিনত হয়েছে। প্রাচীনকালে মূল্যবান জলের উৎস এই বাওড়ের অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল জনবসতি। ইহা ঐতিহাসিক কাকদী গ্রামের উত্তরাংশ, পশ্চিমে বাংরাইল, দক্ষিনে রায়ের চর এবং পূর্বে বিষ্ণুদী গ্রাম দ্বারা পরিবেষ্ঠিত প্রায় সাড়ে তিন কিলো মিটার ব্যাসার্ধ নিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ভারসাম্যতা রক্ষা করে আসছিল। এর গভীরতা স্থানীয় যে কোন জলাশয়ের চেয়ে বেশি থাকায় চৈত্র-বৈশাখ মাস সহ সারাবছর প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষের দৈন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা পূরণ করে আসছে। কৃষিকাজ থেকে শুরু করে গা-গোসল সহ রান্নাবান্নার কাজ পর্যন্ত বাওড়ের জলেই হয়ে আসছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজ এর জল মারাত্মক দুষিত হওয়ার ফলে বাওড়টি জনমানুষের ও পশুপাখির জন্য মৃত্যু ফাঁদে পরিনত হয়েছে। বিগত ৭ (সাত) - ৮ (আট) বছর যাবৎ এক শ্রেনীর মৎস্য ব্যাবসায়ী অধিক লাভের আশায় কম খরচে মৎস্য চাষ করে আসছে। বাওরে পালিত মাছের খাদ্য হিসাবে নিয়মিত হাঁস-মুরগীর বিষ্ঠা, জৈব ও রাসায়নিক সার, মৃত পশু, পাখি (মুরগী) ও বজ্র ফেলে আসছে ফলে বাওড়ের জলের ব্যাবহারযোগ্য পিএইচ মান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জলের রং কালচে ও দূর্গন্ধময় হয়ে গিয়েছে। ঘর-গৃহস্তের কাজে ব্যাবহার অনুপযোগী জলে নামা যায় না। খোশ-পাঁচড়া, উদরাময়, আমাশয়, নিমোনিয়া সহ নানা রোগের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে অতীতে জীবন বাঁচানো আজকের বাওড়। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও পরিবেশ নষ্টের ফলে জনবসতি ভয়ঙ্কর হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় জ্ঞানী-গুনিজন, শিক্ষিত সমাজ এর প্রতিকার চান। তাহারা এই অতিব প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বাওড় / জলাশয় রক্ষার্থে সরকার / জেলা প্রশাসনের দ্রুত সু-দৃষ্টি দাবী করেন।
চলমান বৈশ্বিক ক্রান্তিকালে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক আরো ও বৃদ্ধি পেয়েছে বিশাল জলাধারের জল দূষনে।